, শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪ , ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ


আজ রাণীনগর হানাদার মুক্ত দিবস 

  • আপলোড সময় : ১০-১২-২০২৩ ১০:২৪:২০ পূর্বাহ্ন
  • আপডেট সময় : ১০-১২-২০২৩ ১০:২৪:২০ পূর্বাহ্ন
আজ রাণীনগর হানাদার মুক্ত দিবস 
আবু ইউসুফ নওগাঁ প্রতিনিধি: আজ ১০ ডিসেম্বর নওগাঁর রাণীনগর উপজেলা হানাদার মুক্ত দিবস। ১৯৭১ সালের এই দিনে বীর মুক্তিযোদ্ধারা পাক-হানাদার বাহিনীর সাথে প্রায় ৩৭ ঘন্টা সম্মুখ যুদ্ধের পর রাণীনগর হানাদার মুক্ত করে বীরদর্পে বাঙ্গালী জাতির অহংকার বীর মুক্তিযোদ্ধারা উপজেলা সদরে প্রবেশ করে। এসময় পাক-হানাদার বাহিনীর গুলিতে লুৎফর রহমান নামের এক তরুণ বীর মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন।

১৯৭১ সালে ২৪ এপ্রিল রাণীনগরে পাক বাহিনীরা অনুপ্রবেশ করে। এসময় তারা নিরাপদ স্থান হিসেবে আহম্মদ আলীর বাসা, থানা ভবন ও পাইলট স্কুলে ক্যাম্প স্থাপন করে। তৎকালীন সময়ে স্থানীয় কিছু রাজাকার, আলবদর ও তাদের দোসরদেরকে নিয়ে আতাইকুলা পাল পাড়া, হরিপুর, স্থল-বড়বরিয়া গ্রামে গণহত্যা, নারী নির্যাতন, অগ্নি সংযোগ ও লুটপাটে মেতে উঠে। আহম্মদ আলীর বাসায় বন্দী শিবির ও টর্চার সেল বানিয়ে হাজার হাজার নর-নারীকে পাশবিক নির্যাতন চালাতো পাক হায়েনারা। বগুড়া জেলার আদমদিঘী উপজেলার সান্তাহার মহল্লায় অবাঙ্গালীরা বাঙ্গালীদের উপর গণহত্যা, নারী নির্যাতনের মত জঘন্য অত্যাচারের খবর রাণীনগর সংগ্রাম পরিষদের নেতৃবৃন্দের কাছে পৌছলে মুক্তিযোদ্ধারা রাণীনগর থানায় রক্ষিত গোলাবারুদ, অস্ত্র লুট করে পাক-বাহিনীদের সাথে মোকাবেলার জন্য যুদ্ধের চূড়ান্ত প্রস্তুতি নেয়। 

নওগাঁ জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার হারুন আল-রশিদ জানান, ১৯৭১ সালের ৮ডিসেম্বর সকাল ১১টা থেকে হারুনুর আল-রশিদ ও আকতারুজ্জামান রঞ্জুর নেতৃত্বে রাণীনগর থানা হানাদার মুক্ত করার জন্য ৪০/৫০ জন মুক্তিযোদ্ধা দলের সাথে হক এর দল ও গেরিলা দলের সমন্বয়ে ৯ডিসেম্বর থেকে একযোগে পাক বাহিনীদের উপর আক্রমণ শুরু হয়। মুক্তিযোদ্ধা হারুন আল-রশিদ রেলগেটের ঘুমটি ঘর থেকে আহম্মদ আলীর বাসা ও থানা ভবনে ফায়ারিং শুরু করলে হকের দল, গেরিলা দল এবং একই সাথে মুক্তিযোদ্ধা নূরুল ইসলাম, আব্দুর রাজ্জাক, সোলেমান, সমশের, আক্কাছ, কামরুল, তকিম, ইব্রামিয়া ও রাজা মিয়া ফায়ারিং শুরু করে। 

এসময় পাক-বাহিনীর দুটি ব্যাংকার ধ্বংস হলে তারা পাল্টা গুলি বর্ষণ শুরু করে। পাক-হানাদার বাহিনীর গুলিতে লুৎফর রহমান নামের এক তরুণ বীর মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন। মুক্তিযোদ্ধারা জমির উঁচু আইল ও সীমানা পিলারের আড়ালে অবস্থান নিয়ে শক্রদের উপর বৃষ্টির মতো ফায়ারিং শুরু করে। আত্রাই থেকে ট্রেন-যোগে হানাদার বাহিনী রাণীনগর আসতে না পারে সে জন্য মুক্তিযোদ্ধা নূরুল ইসলাম ও আব্দুর রউফ দুলু চকের ব্রিজের উত্তর দিকে খেজুর-তলী নামক স্থানে রেল লাইন উড়িয়ে দিয়ে রেল যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করে। মুক্তিযোদ্ধা ও পাক হানাদার বাহিনীর মধ্যে প্রায় ৩৭ ঘন্টা তুমুল গোলা-গুলির শব্দে আকাশ-বাতাস ভারী হয়ে উঠে। 

অবশেষে ১০ ডিসেম্বর বিকেল ৫টার কিছু পর মুক্তিযোদ্ধাদের আক্রমণে পাক-হানাদার বাহিনী ও তার দোসররা বগুড়া জেলার সান্তাহারের দিকে পালাতে শুরু করে। রেলওয়ে স্টেশনের সাত্তার কুলি, বাহাদুরপুর গ্রামের এচাহক আলী সহ ১৯ জন রাজাকার-আলবদর অস্ত্রসহ মুক্তিযোদ্ধাদের কাছে আত্মসমর্পণ করে এবং রাণীনগর থানা হানাদার মুক্ত হয়। মুক্তিযোদ্ধা হারুন আল-রশিদ জাতীয় পতাকা উড়িয়ে জয় বাংলা বলে স্লোগান দিতে শুরু করলে চারিদিক থেকে মুক্তিযোদ্ধা সহ স্থানীয় জনগণ জড়ো হয়ে এক সাথে স্লোগান দিয়ে মুখরিত করে তুলে রাণীনগর সদর ও পার্শ্ববর্তী এলাকা।
সর্বশেষ সংবাদ
বিদ্যুতায়িত পিকনিকের বাস, প্রাণ গেল ৩ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীর

বিদ্যুতায়িত পিকনিকের বাস, প্রাণ গেল ৩ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীর